1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফায়ারফক্সের ৫ বছর

১২ নভেম্বর ২০০৯

দেখতে দেখতে জনপ্রিয় ব্রাউজার ‘ফায়ারফক্স’ ৫ বছর পূর্ণ করল৷ অন্য কোন ব্রাউজার ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার’কে সত্যিকারের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে নি৷

https://p.dw.com/p/KTpW
বিকল্প ব্রাউজার ‘ফায়ারফক্স’

প্রেক্ষাপট

ইন্টারনেটে প্রবেশ করতে হলে প্রয়োজন ব্রাঊজার৷ অপারেটিং সিস্টেমের বাজারে প্রায় একচেটিয়া অধিকার কাজে লাগিয়ে মাইক্রোসফট কোম্পানি বহুকাল ব্রাউজারের ক্ষেত্রেও আধিপত্য বজায় রেখেছিল৷ বিকল্প কিছু প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ব্রাউজারের জগতে মাইক্রোসফটের ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার’কে সত্যিকারের চ্যালেঞ্জ জানাবার মত কোন বিকল্প ব্রাউজারের আবির্ভাব ঘটে নি৷ কিন্তু প্রায় ৫ বছর আগে সেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে৷ বার্লিন প্রাচীরের মত একেবারে পতন না ঘটলেও ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার তার একাধিপত্য হারাতে শুরু করে৷ মজার কথা, দিনটিও ছিল ৯ই নভেম্বর – পালিত হচ্ছিল বার্লিন প্রাচীর পতনের ১৫তম বার্ষিকী৷ এইদিনই ফায়ারফক্স নামের এক ব্রাউজার উদয় হয়৷ গত ৫ বছরে গোটা বিশ্বে প্রায় ৩৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১০০ কোটিরও বেশী বার ফায়ারফক্স ডাউনলোড করেছে৷ শুধু প্রতিযোগিতার স্বার্থে বিকল্প হিসেবে নয়, অনেক বাড়তি গুণাগুণের কারণে ফায়ারফক্স ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের প্রিয় হয়ে উঠেছে৷

Firefox Erfinder Blake Ross
মাত্র ১৯ বছর বয়সে ফায়ারফক্সের জন্ম দেন ব্লেক রস৷ বিল গেটসও ১৯ বছর বয়সে মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন৷ছবি: AP

বাণিজ্যিক না হয়েও সাফল্য

ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার’এর সিংহাসন টলিয়ে দিয়েছে যে ফায়ারফক্স, সেই ব্রাউজারের কিন্তু প্রকৃত অর্থে কোন মালিক নেই৷ কম্পিউটারের জগতের বাণিজ্যিক কাঠামোর পাশাপাশি যে বিকল্প ধারা চলে আসছে, তাকে তথ্য প্রযুক্তির জগতে ‘ওপেন সোর্স’ বলা হয়৷ সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে কারো মাথায় নতুন কোন ভাবনা এলে সে ইচ্ছা করলে তার প্রথম খসড়া তৈরি করে ফেলতে পারে৷ সেটিকে ঘষে-মেজে আরও উন্নত করে তোলার জন্য যোগ দেয় বাকিরা – অর্থাৎ এমন শখের প্রোগ্রামার বা তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, যাঁরা মুনাফার জন্য কাজ করেন না৷ সফটওয়্যারের রচয়িতা শুরু থেকেই সব প্রয়োজনীয় তথ্য বাকিদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন৷ ফলে বাকিরা সেগুলি ঘেঁটে নতুন ভাবনা প্রয়োগ করে সফটওয়্যারটিকে ব্যবহারের আরও উপযুক্ত করে তুলতে পারেন৷ এজন্যই এর নাম ‘ওপেন সোর্স’৷ মোজিলা নামের এক ফাউন্ডেশনও বহুদিন ধরে এমন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত৷ মাইক্রোসফটকে চ্যালেঞ্জ জানানোর দুঃসাহস দেখিয়েছিল এই ফাউন্ডেশন৷ প্রথম দফায় অবশ্য তাদের পরাজয় ঘটে৷ নেটস্কেপ নামে মোজিলা’র প্রথম ব্রাউজারকে বাজার-ছাড়া করে মাইক্রোসফট৷ কিন্তু সেই নেটস্কেপ’এর ভস্ম থেকেই জন্ম নেয় দুরন্ত আগুনের শিয়াল – ফায়ারফক্স৷ সেসময়ে বাজারের প্রায় ৯৫ শতাংশ ছিল ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার’এর দখলে৷ মাত্র ৫ বছরের মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ বাজার দখল করে ফেলেছে ফায়ারফক্স৷ তবে ইতিমধ্যে ব্রাউজারের জগতে প্রতিযোগিতা আরও বেড়ে গেছে৷

Internet Explorer Bill Gates
নেটস্কেপ’কে চ্যালেঞ্জ জানাতে ১৯৯৭ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর বিল গেটস চালু করলেন ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারছবি: AP

মোজিলা প্রকল্পে যেসব স্বেচ্ছাসেবী প্রোগ্রামার কাজ করেন, তারা শুধু কাজেই আনন্দ পান৷ বিশ্বের সব কম্পিউটার কাঠামোয় একটি ব্রাউজারকে যতটা সম্ভব ব্যবহারের যোগ্য করে তুলতে গড়ে উঠেছে স্বেচ্ছাসেবীদের এক বিশাল নেটওয়ার্ক৷ প্রোগ্রামিং-এর জ্ঞান থাকলে এবং নতুন কোন গুণ যোগ করতে চাইলে যে কেউ যোগ দিতে পারেন এই উদ্যোগে৷

দুর্বলতা

সোমবার ফায়ারফক্স’এর জন্মদিনে অবশ্য একটি রিপোর্ট কিছুটা অস্বস্তির সৃষ্টি করেছে৷ ইন্টারনেটে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যে সব সমস্যা দেখা যায়, তার এটা বড় ধাক্কা সামলাতে হয় ব্রাউজারকে৷ ব্রাউজারের ফাঁক-ফোকর কাজে লাগিয়ে কম্পিউটারের উপর নানা রকমের হামলা চালানো বা তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়৷ ফায়ারফক্স ‘ওপেন সোর্স’ হওয়ায় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এর বেশ দুর্বলতা রয়েছে৷ এক মার্কিন সংস্থার সূত্র অনুযায়ী ব্রাউজার’এর যত রকম দুর্বলতা সম্ভব, ফায়ারফক্সের মধ্যে তার ৪৪ শতাংশই খুঁজে পাওয়া গেছে৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: আবদুস সাত্তার