1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সৌরজগতের সীমানা নিয়ে নাসার নতুন আবিষ্কার

১ নভেম্বর ২০০৯

আমাদের সৌরজগতের সীমানা কতটুকু? সেটা কিন্তু এখনও আমরা সুনির্দিষ্টভাবে জানি না৷ সম্প্রতি এক তথ্যের মাধ্যমে নাসার বিজ্ঞানীরা সেই জানার অনেক কাছে চলে গেছেন৷

https://p.dw.com/p/KKQu
ছায়াপথে অবস্থিত গ্যাসীয় মেঘছবি: AP

মার্কিন গবেষণা সংস্থা নাসা আমাদের এই মানবসভ্যতার মহাকাশ গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়ে আসছে৷ শুধু সৌরজগত নয় এর বাইরে কি আছে তা জানার জন্য নাসা এখন পর্যন্ত বেশ কিছু নভোযান মহাশুন্যে পাঠিয়েছে৷ মানুষ বিহীন এই নভোযানগুলো মহাশুন্যের অসীম প্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছে পর্যটকদের মত৷ এবং একের পর এক ছবি তুলে পাঠাচ্ছে আমাদের এই পৃথিবীতে৷ সেসব পাঠানো ছবিগুলোই আমাদের সামনে খুলে দিচ্ছে বিজ্ঞানের অনেক অজানা অধ্যায়৷

Schwarm von Sternen
কোটি কোটি নক্ষত্রের সম্মেলনে গঠিত হয়েছে এই মিল্কি ওয়েছবি: NASA

গত বছরের অক্টোবর মাসে পৃথিবী থেকে মহাশুন্যের উদ্দেশ্যে ছোঁড়া হয়েছিল একটি ছোট নভোযান যার নাম ছিল ইন্টারস্টেলার বাউন্ড্রি এক্সপ্লোরার বা আইবেক্স৷ নাম শুনেই বুঝতে পারছেন এই নভোযানের উদ্দেশ্য ছিল মহাশুন্যের অজানা সীমানাকে খুঁজে বের করা৷ পৃথিবীকে কেন্দ্র করে একটি সুনির্দিষ্ট কক্ষপথে এই আইবেক্স ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং ছবি পাঠাচ্ছে৷ সম্প্রতি বেশ কিছু ছবির মাধ্যমে নাসার বিজ্ঞানীরা আমাদের এই সৌরজগতের সীমানা সম্পর্কে একটি ধারণা লাভ করেছেন৷

ছায়াপথ বা মিল্কিওয়ের কথা আমরা কমবেশি সবাই জানি৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন এই মিল্কিওয়ের কোটি কোটি নক্ষত্র থেকে যেই তেজস্ক্রিয় রশ্মি আমাদের এই সৌরজগতের দিকে ছুটে আসছে তা থেকে আমাদের রক্ষা করছে একটি বিশাল আকারের বুদবুদ৷ অর্থাৎ আমাদের এই যে সৌরজগত এবং তার আশেপাশে আরো মহাশুন্য সবকিছুই যেন একটি বিশাল আকারের বুদবুদের মধ্যে অবস্থিত৷ কিন্তু এই বুদবুদের সীমানা আমাদের জানা নেই৷ অসীম ছায়াপথের সঙ্গে এই বুদবুদের মিলনস্থল যে জায়গাটিতে হয়েছে সেই জায়গাটির নাম বিজ্ঞানীরা দিয়েছেন হিলিওপাওজ নামে৷ আইবিএক্সের পাঠানো ছবিতে বিজ্ঞানীরা জানতে পারছেন প্লুটোকে ছাড়িয়ে আরো বহুদুর সামনে চলে যাওয়া সুর্যরশ্মি কোথায় গিয়ে মিলিত হচ্ছে এই বিশ্বব্রহ্মান্ডের সঙ্গে৷ এই মিলনস্থলকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে হয়েছে একটি উজ্জল রংয়ের ফিতা৷ অর্থাৎ গোটা মহাবিশ্বের ছুটে চলা তেজস্ক্রিয় পদার্থ কণার সঙ্গে সূর্যরশ্মির বিদ্যুতায়িত তরঙ্গ গিয়ে মিলিত হচ্ছে ওই জায়গাটিতে৷ বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন সেটিই আমাদের এই সৌরজগতের সীমানা অর্থাৎ এর পর থেকেই শুরু এই বিশ্বব্রহ্মান্ডের অসীম শুন্যতা এবং মিল্কি ওয়ে৷

Supernova
মহাশুন্যে অবস্থিত সুপারনোভাছবি: AP

আইবেক্স এর প্রধান অনুসন্ধানকারী বিজ্ঞানী ডেভিড ম্যাককোমাস নতুন এই আবিষ্কার নিয়ে বলেছেন, আইবেক্স এর পাঠানো ফলাফল সত্যি মনে রাখার মত৷ আমরা যা এতদিন ভেবে এসেছিলাম তা ভেঙ্গে দিয়েছে এটি, এবং যা এর আগে কোনদিন দেখা যায়নি৷ আমরা মনে করেছিলাম আমাদের পৃথিবী থেকে ১০ বিলিয়ন মাইল দূরে যেখানে আন্তঃনক্ষত্র সীমানা সেখানে আমরা সামান্য পার্থক্য দেখতে পাবো৷ কিন্তু আইবেক্স এর মাধ্যমে আমরা দেখতে পেরেছি একটি ফিতার মত যা আকাশের অন্য যে কোন কিছুর চেয়ে দুই থেকে তিনগুন বেশি উজ্জ্বল৷ এই উজ্জ্বল ফিতা গোটা মহাকাশকে সাপের মত করে ঘিরে আছে যা এতদিন পর্যন্ত একেবারেই আমাদের নজরের বাইরে ছিল, বললেন বিজ্ঞানী ডেভিড ম্যাককোমাস৷

স্বাভাবিকভাবেই নতুন এই আবিষ্কার বিজ্ঞান জগতের নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে৷ এবং আনন্দিত ও উত্তেজিত হয়েছে উঠেছেন নাসা সহ বিশ্বের সকল মহাকাশ গবেষকরা৷ বিজ্ঞানীরা আরো আশা করছেন আইবেক্স এর নতুন আবিষ্কার বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের মানচিত্র বের করতে তাদের এবার সহায়তা করবে৷ এবার হয়তো তারা বিশ্বব্রহ্মান্ডের সেই অসীমতার সন্ধানে নতুন কোন মহাকাশযান পাঠাবেন৷

প্রতিবেদক: রিয়াজুল ইসলাম, সম্পাদনা: আবদুস সাত্তার