সব কেন্দ্র চালু থাকলেও বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চাহিদা মিটবে না
২০ এপ্রিল ২০০৯বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) হিসাব অনুসারে ১৪টি উৎপাদন ইউনিট বন্ধ রয়েছে৷ কেবল গ্যাস ঘাটতির কারণে সাড়ে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে না৷ সরকারী হিসাব অনুসারে এখন গড়ে প্রতিদিন লোড শেডিং হচ্ছে এক হাজার থেকে ১১০০ মেগাওয়াট৷ একদিকে প্রচন্ড গরম আর অপরদিকে, বিদ্যুৎ-এর ঘন ঘন যাওয়া আসার কষ্টে দুর্বিষহ নাগরিক জীবন৷
পিডিবির পরিচালক জনসংযোগ বজলুল হক ডয়চে ভেলে‘কে জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে প্রতিদিন গড় চাহিদা দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার মেগাওয়াট৷ ছোট বড় ১৪টি ইউনিট বন্ধ থাকা এবং গ্যাস কম পাবার কারণে অবস্থা সামাল দিতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে৷ জানা গেছে, ১৪টি ইউনিট ফোর্স আউটেজ, পূর্নবাসন এবং জরুরি সংরক্ষনাধীন অবস্থায় রয়েছে৷
সরকারী হিসাব অনুসারে গত কয়েকদিনে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ চাহিদা বেড়ে ৫০০০ মেগাওয়াট হয়েছে বলে উল্লেখ করা হলেও বেসরকারী হিসাবে এই পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার মেগাওয়াট৷ চাহিদা অনুসারে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে পিডিবি সারা দেশে লোড শেডিং করছে৷
জানা গেছে, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান অফিস ঢাকার মতিঝিলের ওয়াপদা ভবনে অতীত ইতিহাসে কখনো লোডশেডিং এর কবলে না পড়লেও এখন এই ভবনেও দিনে দুই থেকে তিনবার লোড শেডিং হচ্ছে৷ এ চিত্র সর্বত্র৷
পিডিবির ১৯ এপ্রিলের হিসাব অনুসারে দেখা যাচ্ছে, সবগুলো বিদ্যুত কেন্দ্র এক সঙ্গে চালু করা হলেও এই মুহূর্তের চাহিদা মেটানো সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়৷ ৩৬টি বিদ্যুত কেন্দ্রের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৫ হাজার ৫৮৭ মেগাওয়াট৷ পুরোনো বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ক্ষমতা লোপ পাবার কারণে এগুলো থেকে সর্বোচ্চ উৎপাদন সম্ভব ৫ হাজার ৩৪ মেগাওয়াট৷ ফলে সবগুলো উৎপাদন কেন্দ্র চালু থাকলেও বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চাহিদা মিটবে না৷ আর সবগুলো বিদ্যুৎ ইউনিট এক সঙ্গে চালু রাখা সম্ভব নয় বলেই বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন৷
গত ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশের একটি জ্বালানি নীতিমালা গৃহীত হয়েছিল৷ এরপর ২০০০ সালে সরকার বিদ্যুৎ খাতের জন্য একটি মাস্টার প্লান তৈরি করে৷ ঐ মাস্টার প্ল্যান অনুসারে সরকার কোন পদক্ষেপই নিতে পারেনি৷ এছাড়া লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চাহিদা গিয়ে দাঁড়াবে ১৭ হাজার মেগাওয়াটে৷ এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে এখনো কোন কার্যকরী পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না বলেই বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন৷
প্রতিবেদক সাগর সরওয়ার, সম্পাদনা আবদুল্লাহ আল-ফারুক