1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সমুদ্রে অম্লতা বৃদ্ধি : জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কুফল

হাফসা হোসাইন১ ডিসেম্বর ২০০৮

বিশ্ব জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রে অম্লতার মাত্রা দিন দিনই বাড়ছে৷ আর এর ফলে হুমকির মুখে রয়েছে ঝিনুক ও প্রবালের মতো জলজ প্রাণী৷ সম্প্রতি এক গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে এই তথ্য৷

https://p.dw.com/p/G6zG
সমুদ্রে অম্লতার মাত্রা বাড়ছে প্রতিদিনইছবি: dpa

কোটি কোটি বছর ধরে বায়ুমন্ডল এবং সমুদ্রে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রায় ভারসাম্য বজায় ছিলো৷ তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, গত দেড়শ বছর ধরে জীবাশ্ম জ্বালানী নি:শেষ হওয়ায় এবং বনাঞ্চলের পরিমাণ কমে যাওয়ায় নষ্ট হচ্ছে সেই ভারসাম্য৷ কারণ বায়ুমন্ডলে মানুষের জন্য ক্ষতিকর কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে চলেছে৷ আর সেই কার্বন ডাই অক্সাইডের এক-তৃতীয়াংশ শুষে নিচ্ছে সাগর৷

সাগরের পানিতে কার্বন ডাই অক্সাইড ও বিভিন্ন উপাদানের মিশ্রণে তৈরি হচ্ছে কার্বনিক অ্যাসিড৷ অতিরিক্ত কার্বনিক অ্যাসিডের ফলে গত দেড় শতকে সাগরের পানির অম্লতা বেড়ে গেছে ৩০ শতাংশ৷ অনুমানের চেয়েও ১০গুণ বেশি হারে বাড়ছে এর মাত্রা৷

যুক্তরাষ্ট্রের টাটোশ দ্বীপে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে, সাগরে অম্লতা বেড়ে যাওয়ায় ঝিনুক, প্রবাল, রাজহাঁসের মতো উপকূলীয় অনেক প্রাণী দ্রুত মরে যাচ্ছে৷ বিজ্ঞানীদের মতে, সাগরের পানিতে অম্লতা বেড়ে যাওযার অর্থ হলো ক্যালসিয়াম কার্বনেটের পরিমাণ কমে যাওয়া৷ এর ফলে শক্ত খোলসযুক্ত জলজ প্রাণীগুলোর দেহ কাঠামো ঠিকমতো তৈরি হতে পারে না৷ তাই ঝিনুকের মতো প্রাণীর সংখ্যা কমে গিয়ে ওসব স্থানে বাড়ছে শৈবালের পরিমাণ৷

গবেষণা রিপোর্টে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বর্তমানে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তা এই শতাব্দীর মধ্যেই কমানো না গেলে বিশ্ব জলবায়ুতে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে৷ ২০ বছর পর সাগরের চিত্রও পাল্টে যাবে৷ বিজ্ঞানীরা আরো বলেছেন, সাগরে যে অম্লতা বেড়েছে তা হঠাৎ করে কমানো সম্ভব নয়৷ এতে সময় লাগবে হাজার বছর৷ ততদিনে অনেক জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে আশংকা বিশেষজ্ঞদের৷

এদিকে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে নতুন এক পরিকল্পনা সেট করেছে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রকল্প৷ যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ২৮ টি গবেষক টিমের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি ওই প্রকল্পের রিপোর্টে ধনী দেশগুলোকে প্রথমে দূষণ কমানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে৷ আর উন্নয়নশীল দেশগুলোকে পর্যায়ক্রমে দূষণ কমাতে বলা হয়েছে৷ এছাড়া ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে জ্বালানী প্রযুক্তি বিনিময়, বনাঞ্চল উজাড় রোধ করার কথাও বলা হয়েছে রিপোর্টে৷ পোল্যান্ডে জলবায়ু সম্মেলনে এসব প্রস্তাব আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপন করা হবে৷