1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কে এই ব্রিজিত?

হাফসা হোসাইন ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৮

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব তো বটেই ঝড় উঠছে বাংলাদেশের চায়ের কাপেও৷ কে হবেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট, এই বিতর্কের সঙ্গে মনোযোগ কেড়েছে জন ম্যাককেইনের ঘরে বেড়ে ওঠা বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এক স্বপ্নদশী কন্যা৷

https://p.dw.com/p/FJPB
১৯৯১ সালে ম্যাককেইন পত্নী সিন্ডি কোলে তুলে নেন ব্রিজিতকেছবি: picture-alliance / dpa

রিপাবলিকান কনভেনশনে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেবার পর একালের রূপকথার সেই কন্যার নামটাও বিশ্ববাসীর জানা, ব্রিজিত ম্যাককেইন৷

১৯৯১ সালে ম্যাককেইন পত্নী সিন্ডি চ্যারিটি ট্রিপে এসেছিলেন ঢাকায়৷ সে সময়ই মারাত্নকভাবে ঠোঁট আর তালু কাটা শিশুটিকে বুকে তুলে নিয়েছিলেন তিনি৷ সেই মেয়েটিই আজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় খুব পরিচিত এক মুখ৷ গল্পের এটুকু কমবেশি সবারই জানা৷ কিন্তু ব্রিজিতের আসল পরিচয়টা কি?

Cindy McCain mit ihrer Tochter Bridget 2
রিপাবলিকান কনভেনশনে ব্রিজিতছবি: picture-alliance / dpa

ব্রিজিতকে নিয়ে আলোড়নের মধ্যে তাকে চিনতে পেরেছেন ঢাকার মাদার তেরেসা হোমের সিস্টার সুপর্ণা৷ কারণ এই এতিমখানাটিতেই এক অবিবাহিতা খ্রিস্টান মায়ের কোলে জন্ম নেয় ব্রিজিত৷ নিন্দা আর সমাজের চোখ রাঙানি, তার উপর শারিরীক বৈকল্য নিয়ে জন্মানো মেয়ের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশংকায় জন্মের পর পরই শিশুটিকে ছেড়ে চলে যায় মা৷

গর্ভধারিণী চলে গেলেও পরম মমতায় শিশুটিকে বুকে তুলে নিয়েছিলেন সিস্টার সুপর্ণা৷ জন্মের পর প্রথম চার সপ্তাহ সারাক্ষণই যত্ন নেন শিশুটির৷ এর পর তো সিন্ডি ম্যাককেইন সোনার কাঠি ছুঁইয়ে ঝলমলে করে তুললেন অবাঞ্ছিত শিশুটির জীবন৷

বাংলাদেশ সমাজ কল্যাণ বিভাগের হিসেবে, দেশের সরকারি ও বেসরকারি এতিমখানাগুলোয় বর্তমানে এতিম কিংবা পরিত্যাক্ত শিশুর সংখ্যা ২ লাখ৷ আর তাদেরই অনেকে ব্রিজিতের মতো বৈকল্য নিয়ে জন্মেছে৷ যারা সমাজে অনেকটা অচ্ছ্যুতই বলা যায়৷

সিস্টার সুপর্ণাই জানালেন, এরকম শিশুর জন্য সমাজে ঠাঁই করে নেয়া খুব কঠিন ব্যাপার৷ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চ্যারিটি হোমেই তাদের কাটাতে হয় সারাটি জীবন৷ হযতো হোমের নানরা তাদের সেলাই ফোঁড়াই শেখান যেনো হোমে বসেই পেট চালানোর জন্য কিছু আয় করতে পারে৷

তবে না ব্রিজিতের জীবনটা এখন হয়ে গেছে আধুনিক কালের রূপকথা৷ চার বয়স পর্যন্ত জটিল সব অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার ঠোঁট কাটা এখন পুরোপুরিই ঠিক করা হয়েছে৷ ম্যাককেইন নির্বাচনে জিতলে সে হবে যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট ডটার৷ আর হোয়াইট হাউসে প্রথমবারের মতো বাস করবে কোন বাংলাদেশী৷

ব্রিজিতকে যখন দত্তক নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন সিন্ডি সেই আবেগময় সময়টার কথা বর্ণনা করলেন চ্যারিটি ট্রিপের চিকিত্‌সক বিল ম্যাককাবে৷ এএফপি-কে লেখা ই-মেইলে জানালেন, ব্রিজিতের চোখে চোখ পড়তেই সিন্ডি বলে উঠলেন, এ তো আমারই মেয়ে৷ দেখুন মেয়েটির সুন্দর চোখ দুটোই বলছে, আমি ওকে ছেড়ে চলে গেলে সে বাঁচবে না৷

সিন্ডির সেদিনের সেই মহানুভবতায় আজ ব্রিজিতের জীবনের এই উত্থান, বিশ্ববাসী জেনেছে বাংলাদেশী এই মেয়েটির নাম, এটি ভেবে আনন্দিত সিস্টার সুপর্ণা৷