1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কুয়েতে বাংলাদেশী শ্রমিকদের ধর্মঘট

রিয়াজুল ইসলাম২৮ জুলাই ২০০৮

কুয়েতে কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমিকরা গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন দাবীতে ধর্মঘট করে আসছে৷ এ পরিস্থিতিতে সেখানকার বাংলাদেশী দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর কুয়েত সরকার শ্রমিকদের দাবী মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/ElTk
কুয়েতে কর্মরত রয়েছে দু লাখেরও বেশী বাংলাদেশীছবি: AP

কুয়েতে বর্তমানে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত রয়েছে দু লাখেরও বেশী বাংলাদেশী৷ নায্য মজুরী সহ বিভিন্ন দাবীতে গত কয়েকদিন ধরে তারা ধর্মঘট করে আসছে৷ তাদেরকে সমর্থন দিয়েছে এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকে আসা শ্রমিকরাও৷ সোমবার রাজধানী কুয়েত সিটির উত্তরপশ্চিমে জালিব আল সুয়ুখ শহরে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ৷

বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম বিভাগের ফার্স্ট সেক্রেটারি শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী জানান, ধর্মঘটী শ্রমিকদের দাবি হচ্ছে তাদের বেতন কমপক্ষে ৪০ দিনার করা, তাদের রেসিডেন্সিয়াল, মেডিকেল ও ইন্সুরেন্স ফি কোম্পানীকে দিতে হবে৷ তাদের বেতন এবং ওভারটাইম শ্রম আইন অনুযায়ী ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে৷ এছাড়া ছুটির সময় কোম্পানীর সুপারভাইজাররা অবৈধভাবে যে অর্থ নিয়ে থাকে তা বন্ধ করা ছাড়াও শ্রমিকদের ওপর বিভিন্ন সময় নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছে শ্রমিকরা৷

BdT Proteste gegen hohe Lebensmittelpreise in Pakistan
বিশ্বব্যাপী শ্রমিক অসন্তোষ বাড়ছে (ফাইল ফটো)ছবি: AP

এদিকে ধর্মঘটী শ্রমিকদের এসব দাবির ব্যাপারে রোববার কুয়েতের শ্রম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়৷ এসময় কুয়েত সরকার শ্রমিকদের এসব দাবী মেনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানিয়েছেন শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী৷ কুয়েত সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশী শ্রমিকদের বেতন কমপক্ষে ৪০ দিনার করা হবে৷ শ্রমিকদের ইন্সুরেন্স, রেসিডেন্স ও মেডিকেল ফি কোম্পানীকেই শোধ করতে হবে৷ এছাড়া অবৈধভাবে শ্রমিকদের কাছ থেকে যারা অর্থ নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কুয়েত ও বাংলাদেশ সরকার যৌথভাবে ব্যবস্থা নেবে বলেও সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে৷

ধর্মঘট পালনরত শ্রমিকদের জানানোর পর তারা এসব প্রতিশ্রুতি লিখিতভাবে দেয়ার দাবী জানায়৷ এ অবস্হায় অনেক কোম্পানীর মালিকরা লিখিতভাবে এ সিদ্ধান্ত মানার কথা জানালে রোববার ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘোষণা দেয় সেসব কোম্পানীর শ্রমিক৷

তবে সোমবার কয়েকটি কোম্পানীর শ্রমিকরা আবারও জড়ো হয়ে ধর্মঘট পালন অব্যাহত রাখে৷ তারা দাবী জানায় দুতাবাস ও শ্রম বিভাগের কর্মকর্তারাসহ মালিকদেরকে শ্রমিকদের ব্যারাকগুলোতে গিয়ে দাবী পুরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসতে হবে৷ এসময় দুটি কোম্পানীর মালিক উপস্থিত হয়ে আশ্বাস দিলেও বাকী কোম্পানীগুলোর পক্ষ থেকে কেউ উপস্থিত হননি৷ ফলে বেশ কিছু শ্রমিক ধর্মঘট অব্যাহত রাখে৷

এদিকে কুয়েতের হাসনাদিয়া এলাকায় আল জাওহারা নামে একটি কোম্পানীর শ্রমিকরা ধর্মঘটের সমর্থনে বিক্ষোভ করে এবং পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে পুলিশও এ্যাকশনে যায়৷ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ এসময় লাঠিচার্জ করা ছাড়াও জলকামান ব্যবহার করে৷ এছাড়া বেশ কিছু শ্রমিককে গ্রেপ্তার করে কুয়েতি পুলিশ৷ তবে কতজন গ্রেফতার হয়েছে তা বলতে পারেনি বাংলাদেশ দুতাবাস৷

এদিকে এ ঘটনায় শ্রমিক রপ্তানীতে কোন প্রভাব পড়লে তা কিভাবে মোকাবেলা করা হবে এ প্রশ্নের জবাবে দুতাবাসের কর্মকর্তা শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী জানান, এ ব্যপারে বাংলাদেশ সরকারের পরবর্তী নির্দেশের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি৷ ইতিমধ্যে পুরো ঘটনা আমরা তাদেরকে জানিয়েছি৷

এদিকে কুয়েতে শ্রমিক অসন্তোষের এ ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী সোমবার কথা বলেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কুয়েতী রাষ্ট্রদুত আবদুল্লাতিফ আলী আল মাওয়াশের সঙ্গে ৷ এসময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের ওপর জোর দেন৷